পুলিশের স্মার্ট নজরদারির আওতায় কেরাণীগঞ্জ

৯ নভেম্বর, ২০২৩ ১৯:০৩  

ঢাকার উপকণ্ঠ কেরাণীগঞ্জ এলাকাকে অপরাধমুক্ত রাখতে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) মাধ্যমে নজরদারি কার্যক্রম শুরু করলো পুলিশ। এই কার্যক্রমে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার আওতাধীন পাঁচটি ইউনিয়নকে ২০০টি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে কেরাণীগঞ্জের সেমন্তী কনভেনশন হলে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য নসরুল হামিদ। ঢাকা জেলা পুলিশের উদ্যোগে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এতে অর্থায়ন করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার সেটি বাস্তবায়নে পুলিশ বাহিনী অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। কেরাণীগঞ্জের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকা জেলা পুলিশের এই উদ্যোগ তারই অংশ। পুলিশ বাহিনী নিজের জীবন বিপন্ন করে মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা জোরদারে আরও একধাপ এগিয়ে গেল কেরাণীগঞ্জ। এই ধরনের সিসিটিভি দেশের আধুনিক এলাকা ছাড়া আর কোথাও নেই। কেরাণীগঞ্জে যে সিসিটিভি ক্যামেরা বসতে যাচ্ছে, সেগুলো খুবই অত্যাধুনিক। প্রতিটি অলি-গলিতে আমরা ক্যামেরা স্থাপন করবো। এর মধ্য দিয়ে কেরাণীগঞ্জের মানুষকে দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা নিরাপত্তা দিয়ে যাবে পুলিশ। ২০২৪ সালের মধ্যে আমরা কেরাণীগঞ্জকে শতভাগ অপরাধমুক্ত ঘোষণা করব ইনশাআল্লাহ।

ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। আরও অতিথি ছিলেন কেরাণীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক ম ই মামুন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কেরাণীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজামান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সেক্রেটারি ও নির্বাহী পরিচালক মাকসুদুর রহমান, চিফ প্রটোকল অফিসার মেজর (অব.) মোহসীনুল, একান্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, বসুন্ধরা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের ডিজিএম মো. শ্যামল, দৈনিক কালের কণ্ঠের উপ-সম্পাদক হায়দার আলী, নিউজটোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের ডেপুটি সিএনই আশিকুর রহমান শ্রাবণ, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সেক্রেটারিয়েট টিমের সদস্য রণিত সেন, মারুফ কাজী ও সোহেল।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান, ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শাহ খুশী, সাকুর হোসেন সাকু, সাইদুর রহমান চৌধুরী ফারুক, ব্যবসায়ী স্বাধীন শেখ প্রমুখ।

উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ নুরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের যে সুফল কেরাণীগঞ্জের মানুষ পাবে, তার সঙ্গে অন্য কিছুর তুলনা হয় না। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, গাজীপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত সড়কে ব্যাপক ডাকাতির ঘটনা ঘটতো। আমি দায়বদ্ধতা থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটারজুড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে দিয়েছিলাম। এরপর থেকে ডাকাতি, অতিরিক্ত গতিতে গাড়িচালনা থেকে শুরু করে অপরাধ কর্মকাণ্ড অনেকাংশেই লাঘব হয়ে গেছে। কোনো এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলে যেকোনো অপরাধী অপরাধ সংঘটনের আগে চিন্তাভাবনা করবে। কেরাণীগঞ্জে যে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে, সেটি হবে দেশের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির।

কেরাণীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, অনেকগুলো চোখ, যা দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা কেরাণীগঞ্জের মানুষকে নিরাপত্তা দেবে, সেই চোখগুলোর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আজ। প্রধানমন্ত্রীর যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন, তারই অংশ এটি। সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে কেরাণীগঞ্জের ৯৯ শতাংশ অপরাধ দমন হবে বলে আমি মনে করি।